ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

টেকনাফে ৪টি ইউনিয়নে লড়াই হবে ত্রিমুখী, বিদ্রোহী প্রার্থীদের রোষানলে দলীয় প্রার্থীরা

up elগিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ::

টেকনাফ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের নির্বাচন ২২ মার্চ। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন এবং মাঠে নেমেছে বিজিবি-পুলিশ-কোস্টগার্ড ও আনসার সদস্যরা। এদিকে ৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের এক মাসের সকল প্রকার প্রচার-প্রচারনাও প্রায় শেষ পর্যায়ে। কারণ রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত নির্বাচন। ভোটারদের মাঝে শুরু হয়ে গেছে নানান আলোচনা কে হারবে, কে জিতবে এনিয়ে পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকানে চলছে শেষ হিসাব-নিকাশ।

টেকনাফ উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে নির্বাচনী হালচালের খবর নিয়ে আরো জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে। এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আলম, ধানের শীষ নিয়ে জিয়াউর রহমান, আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান মিয়া। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী থাকলেও আলোচনা নেই বললেই চলে। সাবরাং ইউনিয়নেও ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে। সাবরাং-শাহপরীরদ্বীপের এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে আছে আলহাজ্ব সোনা আলী, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা নুর হোসেন, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আছে প্রভাবশালী বিএনপি নেতা সুলতান আহমদ বিএ। এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান হামিদুর রহমানের আলাদা ভোট ব্যাংক রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শাহপরীরদ্বীপের বিএনপি নেতা মো: ইসমাইলও চেয়ারম্যান হওয়ার আশায় আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে আছে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নেও লড়াই হবে ত্রিমুখী। এতে নৌকার মাঝি হিসেবে মাঠে আছেন মুজিবুর রহমান, আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর আহমদ, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভি আবদুর রহমান। উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ায় নৌকার কর্নধার হয়ে নির্বাচন করছেন মৌলভি আজিজ উদ্দিন, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন প্রবাসী বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি মো: সিকান্দার, আনারস প্রতীক নিয়ে আবারো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহ। এছাড়া এ ৪টি ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

এই উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৭৬ হাজার ৭৭৭ জন। এর মধ্যে টেকনাফ সদর ইউনিয়নে ২৫ হাজার ৯৭১, সাবরাং ইউনিয়নে ২৯ হাজার ৬৪১, বাহারছড়া ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৭১ ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা মাত্র ৩ হাজার ৯৪।

উল্লেখ্য, এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলোতে সর্ব প্রথম বাংলাদেশের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হলে (আওয়ামীলীগ-বিএনপি) নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে লড়াই হওয়ার কথা থাকলেও টেকনাফ উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে অন্যরকম চিত্র দেখা দিয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের রোষানলে পড়েছে দলীয় প্রতীক পাওয়া নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীরা। এনিয়ে চলছে কেন্দ্রীয়, জেলা নেতৃবৃন্দের বহিস্কারের হিড়িক। কারণ কিছুতেই থামছে না বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এনিয়ে গত কয়েকদিনে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত হয়েছে টেকনাফ সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান মিয়া, সাবরাং ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা নুর হোসেন, সেন্টমার্টিনের নুর আহমদ। অন্যদিকে ধানের শীষের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বহিস্কৃত হয়েছেন শাহপরীরদ্বীপের বিএনপি নেতা মো: ইসমাইল, হ্নীলা ইউনিয়ের বিএনপি নেতা জালাল উদ্দিন। এছাড়া নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে কাজ করায় দায়ে বহিস্কার হয়েছে পৌর যুবলীগ সভাপতি মঞ্জুরুল করিম সোহাগসহ অনেকেই। এভাবে চলছে বহিস্কারের হুমকি ও সতর্কবার্তা। এদিকে এলাকার সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে আরো জানা যায়, দলীয় প্রার্থী মনের মত না হওয়ার কারণে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সচেতন মহলের কয়েকজন অভিমত প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে জাতীয় প্রতীকের চেয়ে এলাকার ব্যক্তি ইমেজকে ভোটাররা প্রাধান্য দিচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে পারবে।

পাঠকের মতামত: